নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করুন নাহলে আবেগ আপনাকে গ্রাস করে ফেলবে , যা অত্যন্ত ভয়াবহ ।
আবেগকে এত বেশি প্রাধান্য দিবেন না যে
, সে আপনি যা চান বা জীবনে যা হতে চান সেই রাস্তা থেকেই আপনাকে সরিয়ে নেয় । কিন্তু আবার আবেগ কিন্তু একদম তুচ্ছ ও নয় , যাকে একদম সরিয়ে ফেলতে হবে । কারণ আবেগ ছাড়া মানুষ যন্ত্রে পরিণত হয়ে যায় । আজকে এই ক্ষতিকর আবেগগুলো
কিভাবে এড়িয়ে চলা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো , আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকুন ।
আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
আসসালামুয়ালাইকুম সবাইকে ।
নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে সবাই পারে না ।
কিন্তু নিজের
আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারার ক্ষমতা একবার অর্জন করতে পারলে মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়ে যায় । কষ্ট পাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে এবং আবেগের ফলে যাতে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে পস্তাতে না হয় তা থেকে বাঁচতে সাহায্য করে এই ক্ষমতা ।
আমাদের সামাজিক ,
মানসিক , ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবন
অনেকাংশে আবেগের
উপর নির্ভরশীল । বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা দেয়া আছে , আমাদের
মস্তিষ্ক ২ ভাবে কাজ করে । একটি হচ্ছে কোন কাজের পিছনের কারন দেখে এরপর সিদ্ধান্ত নেয়
কাজটা করা ঠিক হবে , নাকি হবে না ?? আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে আবেগের ফলে কোন কিছু না ভেবেই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয় , যা
পরবর্তীতে আপনার জীবনে অনেক ক্ষতির কারণ হয় । প্রতিটি কাজ করার
আগে অনেক ভেবে চিন্তে
পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ । কাজটার সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে , এরপর
সিদ্ধান্ত নিবেন । গবেষণায় দেখা গেছে , মানুষের আবেগের ফলে নেয়া ৮০ শতাংশ সিদ্ধান্তই ভুল হয়ে থাকে । তাই আবেগপূর্ণ হয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নিলেই ভালো । যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে একটু ভাবুন ১ সেকেন্ডের জন্য
হলেও । কেননা আবেগময় সিদ্ধান্তগুলো পরবর্তীতে আপনার কান্নার কারণ হতে পারে । তাহলে বলুন তো কোনটা
ভালো ??
যেকোনো কাজ করার আগেই
ভেবে নেয়া নাকি কাজটা হয়ে যাওয়ার পর আফসোস করা ?? অবশ্যই নিচে কমেন্টে
লিখে জানাবেন এই প্রশ্নের উত্তরটি ।
আমরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাই ছোটখাটো কারণে ।
আমরা যদি এই ছোটখাটো আবেগকে অতটা প্রাধান্য না দিয়ে বড় বড় আবেগ যেমন ভবিষ্যৎ
, কর্মজীবনকে বেশি প্রাধান্য দেই তখন আমরা আর ছোটখাটো কারণে কষ্ট পাবো না ।
আমরা যাকে যত বেশি প্রাধান্য দিবো তার থেকে পাওয়া কষ্টটাও তত বেশি হবে । তাই কোন আবেগকে প্রাধান্য দেয়ার আগে একটু ভাবা উচিৎ ।
আপনাদেরকে একটা গল্প বলি , মমতা ছেলের জন্য
খাবার তৈরি করে অপেক্ষা করছে কিন্তু ছেলের বাসায় আসছে না । ফুটবল ম্যাচ ছিল বলে আজ অনেক
দেরি করে ফেললো সে বাসায় ফিরতে । বাসায় ঢুকতে যাবে তখনি মায়ের প্রশ্ন কি ব্যাপার
এতো দেরি কেন আজকে বাসায় ফিরতে ?? তখন ছেলের কাছে দুইটা
রাস্তা থাকে ।
হয় সে চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করবে “ আহ মা
দেখছ তো আমি অনেক ক্লান্ত পরে কথা বলা যাবে না নাকি। আমি তো আর কোথাও চলে যাচ্ছি
না । এখন অন্তত ঘরে ঢুকতে দেও , খাবার
খেতে দেও , খুদা লেগেসে আমার । নয়তো মাকে বুঝিয়ে বলবে দেরির
কারণ “ আহা মা
রাগ করো না । আজকে জানো কি হয়েছে ?? আমাদের কলেজে ফুটবল
খেলা হয়েছে । আমি না ৩ টা গোল দিয়েছি
আমাদের দল থেকে । আর শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচটা আমদের দল
জিতেছে । তাই একটু দেরি হয়ে গেল । এখন চল তো মা খেতে দেও অনেক খুদা লেগেছে আমার ।
আর রাগ করে থেকো না লক্ষী মা আমার ” । আমরা বেশিরভাগ মানুষ অন্যের দিকটা না বুঝেই শুধুমাত্র
নিজের দিকটা বুঝি আর চিৎকার চেঁচামেচি , বকাবকি , ঝগড়া শুরু করে দেই । আমরা যদি শুধু নিজের সম্পর্কে ভাবি তাহলে আমরা
অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে যাই । তাই শুধু মাত্র নিজের দিকটা না ভেবে অন্যের দৃষ্টিকোনটাও যুক্তি দিয়ে
দেখুন ।
মস্তিষ্কের আবেগপ্রবণ ভাগটা মারাত্মকভাবে তার যুক্তিগত
ভাগটাকে ক্ষতি করে ।
তাই কিছু বলার আগে নিজের চিন্তাধারায় একবার
শুধু মাত্র ১ সেকেন্ডের জন্য একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন লাগান । নিজেকে প্রশ্ন করুন কেন
?? আপনার যখনি মনে হবে আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছেন তখনি নিজেকে থামান
এবং নিজকে প্রশ্ন করুন কেন ?? কেন এর উত্তর খুঁজে বের করুন
দেখবেন আপনি আপনার অনুভূতিকে আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন ।
আমাদের আবেগগুলো কিন্তু সৃষ্টি হয় আমাদের চিন্তা থেকে । আমরা
যা চিন্তা করবো তার উপর ভিত্তি করে আমাদের অনুভূতি সৃষ্টি হবে । চিন্তাগুলো ইতিবাচক হলে আমাদের
অনুভূতিটা ভালো হয় আর চিন্তাগুলো নেতিবাচক হলে আমাদের অনুভূতিটা খারাপ হয় । তাই
আমাদেরকে চিন্তা প্রতিস্থাপন করা শিখতে হবে । আপনি
যখনি দেখবেন আপনার মস্তিষ্কের মধ্যে নেতিবাচক চিন্তা আসছে থামেন এবং আপনি সম্পূর্ণভাবে
আপনার নিঃশ্বাসের উপর মনোযোগ দিন । এরপর চিন্তা করুন আসলে
আপনি ভাবছিলেন কোন বিষয়টা নিয়ে ?? তখন দেখবেন
আপনার চিন্তা সম্পূর্ণ ০ । কোন চিন্তাই নেই । আমার
কথা যদি বিশ্বাস না হয়
আমার ভিডিওটা এখনি বন্ধ করে একটা বার ভাবুন , আসলে আপনি এখন কোন বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করছেন ? কি খুঁজে পেলেন কোন চিন্তা আছে
কি ?? যখন চিন্তা ০ হয়ে যাবে এরপর আপনার জীবনের ভালো সময়গুলো
মনে করার চেষ্টা করুন । এভাবে আপনি সহজেই নেতিবাচক
চিন্তাকে ইতিবাচকে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন যেমনটা আমরা টিভিতে চ্যানেল বদলাই ঠিক সেভাবে
।
যদি আপনি অনুভুতির উপর নিয়ন্ত্রন পেতে চান তবে সর্বপ্রথম নিজের চিন্তার
উপর নিয়ন্ত্রন করতে শিখুন । আপনি নিজের চিন্তাকে নিয়ন্ত্রন
করতে পারলে খুব সহজে নিজের অনুভুতিকেও নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন । অনুশীলন
একটা মানুষকে নিখুঁত করে তুলে । তাই
চেষ্টা করে যান কথাগুলো মেনে ।
পরবর্তীতে কোন বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করলে ভালো হবে আমাকে পরামর্শ দিন । আগামী ভিডিওতে আলোচনা করবো পানি
আপনার জন্য মৃত্যুর কারণ নয় তো
??
link
No comments